৬ সেপ, ২০২৪

Activities of Awami League /Satro league

  ‘র’ ও হাসিনার পরবর্তী পরিকল্পনা কী?

দ্য মিরর এশিয়া


১৬ জুলাই যখন হাসিনা সরকার শিক্ষার্থীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়, তখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সরকারের অনুকূলে চলে যায়। পরবর্তীতে শেখ হাসিনার বিশেষ অনুরোধ ও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সরাসরি তদারকিতে বাংলাদেশে ‘র’ এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০০ কর্মকর্তা ঢাকায় যান। তাদের ভাষায়, আন্দোলন কাশ্মীরি কায়দায় দমন করে তারা দিল্লি ফেরেন ২৮ জুলাই।


কিন্তু পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ‘র’ ওয়াকিবহাল ছিল না। তাদের ভাষায়, তারা সিআইএ’র কৌশলের কাছে হেরে যান ৫ আগস্ট। যদিও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দিল্লি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেওয়া নয়। ২ আগস্ট প্লান ‘সি’ এর অংশ হিসেবে এই পরিকল্পনা করে রাখে হাসিনা ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিদ ডোভাল। উল্লেখ্য, ভারত দক্ষিণ এশিয়াকে তার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অঞ্চল হিসেবে দেখে, ফলে এসব দেশের ব্যাপারে নিরাপত্তা উপদেষ্টার একটা হস্তক্ষেপ থাকে।


‘র’ ৫ আগস্টের পর ১০ আগস্ট সংখ্যালঘুদের সমাবেশের আড়ালে একটি প্রতিবিপ্লব করার পরিকল্পনা করে। তার জন্য বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সাংবাদিকও সেদিন ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। সেটি ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ক্যু পরিকল্পনা করা হয় ১৫ আগস্ট। সেটিও ব্যর্থ হয়। তবে সম্প্রতি দেশে যে আনসার বিদ্রোহের পরিকল্পনা হয়, তা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ। তার সাথে ‘র’ এর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি দ্য মিরর এশিয়া।


ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনা কী হতে পারে, তা নিয়ে গেল এক সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান করেছে দ্য মিরর এশিয়া। সম্প্রতি হাসিনাকে সাউথ দিল্লির একটি সরকারি আবাসিকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, হাসিনা বর্তমানে ভারতের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টিলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) সুরক্ষিত একটি ভবনে থাকছেন। অতি সম্প্রতি ভারতের ডজনখানেক হাই-প্রোফাইল মিটিং হয়েছে তার সাথে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ‘র’ প্রধান নিজে শেখ হাসিনার দেখভাল করছেন এবং তার সাথে প্রায়ই বৈঠক করছেন।


মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য হাসিনার সাথে নিয়মিত সাক্ষাৎ করছে তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও। নিয়মিত যোগব্যায়ামও করছেন হাসিনা। হাসিনার নতুন বাসভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নিয়োগ দেখে দিল্লিতে কর্মরত এক বাঙালি সাংবাদিক দ্য মিরর এশিয়াকে বলেছেন, হাসিনা দিল্লিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকবেন।


দ্য মিরর এশিয়া নজর রাখছে হাসিনা ও ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনার দিকে। এজন্য বাংলাদেশের ওপর নজর রাখেন এমন দুই সাংবাদিক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা, দুজন থিংক ট্যাংকের গবেষক ও সিক্রেট সার্ভিসের একজনের সাথেও কথা বলেছে দ্য মিরর এশিয়া।


জানা গেছে, ভারত এই মুহূর্তে দুই নৌকায় পা রেখে চলতে চায়। প্রথমত, ঢাকার নতুন সরকার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য কূটনীতিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, তারা জামায়াতে ইসলামীর সাথেও আলোচনা করতে রাজি। তবে জামায়াতের জন্য আলোচনার ‘দরজা’ খুলতে চান না তারা, ‘জানালা’ খুলতে চায়। যেমনটা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।


জানা গেছে, আপাতত দুটি প্রোজেক্ট দেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রোজেক্ট ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর। এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য হলো ইউনূস সরকারের ওপর ভর করেছে শিবির, হেফাজত ও হিযবুত তাহরির- বামপন্থিদের মাধ্যমে এই বয়ান হাজির করানো। সেই সাথে হেফাজত ইসলামের একটি অংশ, যার সাথে ‘র’ এর দীর্ঘদিনের যোগাযোগ, তাদের বোঝানো হচ্ছে ‘ড. ইউনূস সুদখোর, তিনি মার্কিন এজেন্ট, কোনভাবে একজন ভালো মুসলিম নন। বেশ কিছুদিন গেলে এই সরকার সমকামীদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে পারে’। এই গ্রুপকে জামায়াতের সাথে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ঐক্যে না যাওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


তবে মিশন থেকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, আন্দোলনকারীদের সাথে হিযবুত তাহরীর সংশ্লিষ্টতা ও তাদের ভাবাদর্শ নিয়ে একটি ভয় তৈরি করার দিকে। দ্য মিরর এশিয়া জানতে পেরেছে, ইতিমধ্যে ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী’ তিনজন বামপন্থী সাবেক ছাত্রনেতার সাথে পশ্চিম বাংলায় দিল্লিতে কর্মরত একজন সাংবাদিক দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেছেন। তাদের সাথে ভবিষ্যতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।


এদিকে, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে ‘র’ এর মধ্যে একটি উপ-গ্রুপ করা হয়েছে ‘বাংলা মিশন’ সম্পন্ন করার জন্য। সম্প্রতি চিকেন নেক নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য ও সেভেন সিস্টার নিয়ে সমন্বয়কদের কারো কারো বক্তব্যকেও আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত গোয়েন্দা উপ-টিম ‘বাংলা মিশন’। তাদের প্রত্যেকের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে হিন্দি ও ইংরেজিতে অনুবাদ করে ভিক্টর-২ এর টেবিলে দেওয়া হয়েছে। ভিক্টর-২ হলো ‘র’ এর একটি প্রোটোকল, যার কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কিত সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।


অন্যদিকে, আন্দোলনকারী সমন্বয়কদের নিয়ে ও তাদের আদর্শিক ধারণা নিয়ে দিল্লির দুটি ও আসামের একটি  থিংক ট্যাংক গত ২০ দিন ধরে গবেষণা করেছে। তিনটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, সমন্বয়করা যে দল গঠন করতে যাবে তা হবে একটি ভারতবিরোধী রাজনৈতিক দল। বামপন্থি বৈপ্লবিক ধারণা তারা পোষণ করলেও তাদের সাথে ধর্মের বিরোধ থাকবে না। এই আদর্শের ফলে মূলত দেশের বামপন্থিদের রাজনৈতিক স্পেস একেবারে শূন্য হয়ে যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ফলে তারা বামদের সাথে তরুণদের একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হবে বলে ধারণা করছেন। সে চিন্তা থেকেই ‘র’ বামপন্থি ছাত্র নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছে।


এছাড়া সম্প্রতি হয়ে যাওয়া গণঅভ্যূত্থানকে তারা একটি দার্শনিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি দিতে চাইলে বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের একচ্ছত্র বয়ান ক্ষুণ্ন হবে বলে মনে করছেন, যা ঢাকায় ভারতের সফট পাওয়ারকে দুর্বল করে দেবে। এই গণঅভ্যূত্থানের চেতনাকে বৃহত্তর পরিসরে গ্রহণ করা হলে, ‘র’ এর দ্বিতীয় পরিকল্পনা ‘রিসেটেল আওয়ামী লীগ-২০২৫’-ও খুব কঠিন হয়ে যাবে।


দিল্লিভিত্তিক একজন বাংলাদেশ গবেষক দ্য মিরর এশিয়াকে বলছিলেন, হাসিনার অসাধারণ ক্ষমতা আছে কামব্যাক করার। তিনি ৮১-তে, ৯৬-তে কামব্যাক করেছেন। ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে গিয়ে তিনি ২০০৯ সালে অপ্রতিরোধ্যভাবে ফিরে এসেছেন। আমি মনে করি, হাসিনা ফিরতে পারবেন আবার, তিনি হয়ত দিল্লি থেকে দল পরিচালনা করবেন। কিন্তু তার দল ফিরতে পারবে। তবে সেখানে সংকট হবে গণঅভূত্থানের ইতিহাসকে জাতীয় ইতিহাস, সাহিত্যকর্মের অংশ করে একটি আদর্শিক ভিত্তি তৈরি করলে। তাই আমরা ছাত্রদের বেশি সময় দিতে চাই না। ভারত মনে করছে, বিএনপি আমলে বরং আওয়ামী লীগ বেশি নিরাপদ থাকবে। বিএনপির নানা সংকট সামনে চলে আসলে, বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তৈরি হলে আওয়ামী লীগ একটা পলিটিকাল স্পেস পেতে পারে।


আসাম থেকে একজন বাংলাদেশ এক্সপার্ট কথা বলেছে দ্য মিরর এশিয়ার সাথে। তিনি বলেছেন, হাসিনা নর্থ ইস্টের সাথে ভারতের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার যে কথা বলছিলেন, সে স্বপ্ন একেবারে ভেঙে গেছে। বিএনপি এ ক্ষেত্রে ভারতকে সহযোগিতা করবে না। নতুন রাজনৈতিক দল হবে অনেক বেশি তারুণ্য নির্ভর, তারা কূটনীতির চেয়ে রাজনৈতিক ভাষায় বেশি কথা বলবেন। এমনকি তাদের কিছু সিদ্ধান্ত সেভেন সিস্টারের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আমরা মনে করছি।


ফলে এই মুহূর্তে ভারতের অগ্রাধিকার হলো- তরুণদের কোন দল গঠনের সুযোগ না দিয়ে বর্তমান সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে হিযবুত তাহরির ও শিবির প্রভাবিত সরকার বলে একটা অস্থিরতা তৈরি করা। অন্যদিকে নির্বাচনের পরিবেশের কথা বলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নিয়ে আসা, যেমনটা দ্য মিরর এশিয়ার সপ্তাহ ধরে চলা অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।


----------


The Mirror Asia

Courtesy : H M Khalid Hasan


একটা মারলে আর একটা সরে না



ইন্টারনেট বন্ধ করে শতশত মানুষ হত্যা


আয়না ঘর/কাজল সাংবাদিক


Pilkhana


আওয়ামী লীগের কু-পরিকল্পনা ক্লিক করুন। 


Sheik Mujib's Activities


Bongo Bondhu


নিচে ছাত্রলীগের কু-পরিকল্পনা।সঠিক কিনা জানিনা। 


৪ সেপ, ২০২৪

শেখ হাসিনার পতনের পর যেসব বড় পরিবর্তন হলো দেশে

 



জাতীয়



প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:০৫

শেখ হাসিনার পতনের পর যেসব বড় পরিবর্তন হলো দেশে

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

 অনলাইন ডেস্ক


শেখ হাসিনার পতনের পর যেসব বড় পরিবর্তন হলো দেশে

চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের অবস্থান। ছবি : বিবিসি


আজ থেকে ঠিক একমাস আগে গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচই অগাস্টের ওই ঘটনার তিনদিন পর শপথ গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন এই সরকারের হাতে গত এক মাসে প্রশাসনের শীর্ষপদে ব্যাপক রদবদলের ঘটনা ঘটেছে, যা এখনও চলমান আছে। সেইসঙ্গে, দেশের আর্থিকখাতসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে সংস্কার উদ্যোগ।



স্থানীয় জনপ্রতিধিদের অপসারণ করে তাদের জায়গায় বসানো হয়েছে প্রশাসক। ব্যাংকখাত সংস্কারে সিদ্ধান্ত হয়েছে আলাদা কমিশন গঠনের। সেই সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, অনিয়ম-জালিয়াতির ঋণ ও পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার। কর্মবিরতি ও হামলার ভয় কাটিয়ে আবারও মাঠে ফিরেছে পুলিশ।



পোশাক ও লোগো পরিবর্তনসহ নানান সংস্কারের মাধ্যমে বাহিনীকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলার কথা বলছে নতুন সরকার।

এদিকে, হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ আমলের এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে হচ্ছে একের পর এক মামলা হতে দেখা যাচ্ছে, গ্রেপ্তারও হয়েছেন অনেকে। এর বিপরীতে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার একাধিক মামলার সাজা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তি দেওয়া হয়েছে কারাগারে বন্দী বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের।


সেইসঙ্গে জামিন দেওয়া হয়েছে জঙ্গি কার্যক্রমসহ গুরুতর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। সব মিলিয়ে গত এক মাসে ঠিক কী কী ঘটনা ঘটেছে?


পুলিশের থানায় ফেরা


গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন এলাকার বহু থানায় নজিরবিহীন হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় সারা দেশের ৬৩৯টি থানার মধ্যে অন্তত ৪৫০টি ‘আক্রান্ত’ হয়েছিল বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন। ভাঙচুর করে থানা জ্বালিয়ে দেওয়া, অস্ত্র ও মালামাল লুট, এমনকী পুলিশ হত্যার ঘটনাও তখন ঘটতে দেখা গেছে। সরকার পতনের আগে-পরে সহিংসতায় সারা দেশে পুলিশের কমপক্ষে ৪৪ জন সদস্য নিহত হন বলে জানান কর্মকর্তারা।


এমন পরিস্থিতিতে কর্মস্থলে নিরাপত্তা, পুলিশ হত্যার বিচার, ক্ষতিপূরণসহ বেশকিছু দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। এতে চুরি-ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়াসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতে ব্যাপক অবনতি ঘটে। একপর্যায়ে, স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবীরা রাত জেগে পাড়া-মহল্লায় পাহারা দেওয়া শুরু করেন।


ফলে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সারা দেশে ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর পুলিশের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।


সেইসঙ্গে, কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেন, ১৫ই অগাস্টের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে তিনি চাকরি করতে ইচ্ছুক নন বলে ধরে নেয়া হবে। এ অবস্থায় ১১ই অগাস্ট কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে থানায় ফেরেন পুলিশ সদস্যরা। যদিও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।


এদিকে, মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি পুলিশকে জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বাহিনীর পোশাক ও লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও পোশাক ও লোগো পরিবর্তনের ফলে পুলিশের কাজে কতটুকু পরিবর্তন আসবে, সেটি নিয়ে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছেন, প্রশ্ন আছে বিপুল ব্যয় নিয়েও। তারপরও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে পোশাক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন বাহিনীর প্রধান।


“এই পোশাক পরে সাম্প্রতিক আন্দোলনে অনেক ঘটনা ঘটেছে...পোশাক একটি মাইন্ডসেট তৈরি করে। সে কারণে এটি পরিবর্তন করা প্রয়োজন,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। “পুলিশ যেন বাড়াবাড়ি না করে, মানুষ যেন কমিউনিটি ট্রাস্টটা পায়, সেই চেষ্টাই আমরা করবো,” বলেন মি. ইসলাম।


প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল


গত এক মাসে প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে ব্যাপক রদবদল হতে দেখা গেছে, বিশেষতঃ অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর। স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নতুন করে বদলি, পদায়ন ও নিয়োগ করা হয়েছে কয়েকশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে। অনেকেই হয়েছেন বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওএসডি)। বেশ কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো হয়েছে।


আওয়ামী লীগ আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ইতোমধ্যেই বাদ পড়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের দায়িত্বে থাকা তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করা মাসুদ বিন মোমেন। একইভাবে, চাকরি হারিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তার জায়গায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান।


এর আগে, গত ছয়ই অগাস্ট চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের চুক্তি বাতিল করে নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) করা হয় অতিরিক্ত আইজিপি’র দায়িত্বে থাকা মো. ময়নুল ইসলামকে। বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ আরও অনেক কর্মকর্তাকে। অন্যদিকে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।


প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে যাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তারা ‘শেখ হাসিনার সরকারের অনুগত’ ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের জায়গায় আগের কোণঠাসা বা বঞ্চনার শিকার কর্মকর্তারা প্রাধান্য পাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। সরকারি কর্ম কমিশনের পরীক্ষার সবধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও গত দেড় যুগে নিয়োগ না পাওয়া আড়াইশ’র বেশি ব্যক্তিকেও সম্প্রতি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, কাজে গতি আনতেই প্রশাসনে রদবদল আনা হচ্ছে।


“দায়িত্বে থেকে এখন যারা সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না, সে সব জাতীয় জায়গায় দ্রুত পরিবর্তন আনা হচ্ছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, প্রশাসনের আগের চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।


বিচার বিভাগে বড় পরিবর্তন


আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যূতির পর বিচার বিভাগেও বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে গত ১০ই অগাস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। আপিল বিভাগের অন্য বিচারপতিরাও তার সঙ্গে পদত্যাগ করেন। এ ঘটনার পর নতুন বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন আপিল বিভাগের বিচারক সৈয়দ রেফাত আহমেদ। একইভাবে, আপিল বিভাগে নতুন আরও চার বিচারপতিকে নিয়োগ দেওয়া হয়।


এদিকে, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। মি. আসাদুজ্জামান বিএনপির কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ফলে দলীয় বিবেচনায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কী-না, সে প্রশ্নও উঠতে দেখা যাচ্ছে।


অন্যদিকে, আগের নিয়োগ বাতিল করে সম্প্রতি সারা দেশে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে ২২৭ জন আইনজীবীকে নতুন নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ৬৬ আইনজীবীকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ১৬১ আইনজীবীকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 


পদত্যাগের হিড়িক



শেখ হাসিনার পতনের পর সরকারি, আধা-সরকারি, এমনকী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় পদ ছাড়ছেন, আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ, অপমান-অপদস্তসহ নানান চাপের মুখে কর্তা ব্যক্তিরা পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।


শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত চার সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ শীর্ষ পদের ব্যক্তিরা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।


বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিগগিরই নতুন উপাচার্য নিয়োগ হবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সেইসঙ্গে, কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে গত নয়ই অগাস্ট পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তার আগের দুইদিনে ডেপুটি গভর্নরসহ অন্তত চারজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে সাদা কাগজে লিখিত দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়।


পরবর্তীতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরকে নতুন গভর্নর করা হয়। একইভাবে, গত কয়েক সপ্তাহে ঢাকা ওয়াসা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।


এদিকে, বৃহস্পতিবার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকসহ অন্তত আটটি ব্যাংকের আগের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।


এছাড়া প্রেসক্লাবের মতো প্রতিষ্ঠানেও শীর্ষপদে পরিবর্তন আসতে দেখা গেছে। একই ঘটনা ঘটেছে, সময় ও একাত্তর টেলিভিশনে।


ড. ইউনূস ও খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল


সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে বিচার বিভাগে পরিবর্তন এসেছে। সেইসঙ্গে, পাল্টে গেছে অনেক মামলার রায়। আওয়ামী লীগ শাসনামলে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরজাহান বেগমকে।


কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগের দিন তাদের দু’জনেরই সাজা বাতিল করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইভাবে, তারা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের মামলা থেকেও সম্প্রতি খালাস পেয়েছেন। যদিও শুরু থেকেই অধ্যাপক ইউনূস বলে আসছিলেন যে, ‘হয়রানি’ করার জন্যই ভিত্তিহীন মামলায় তাদের ফাঁসানো হয়।


অন্যদিকে, শেখ হাসিনার আমলে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের জেল দেওয়া হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। কিন্তু সরকার পতনের একদিন পরেই রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া মানহানির অভিযোগে দায়ের করা পাঁচটি মামলা থেকেও খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। মামলাগুলো ‘মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ ছিল বলে অভিযোগ করে আসছিল বিএনপি। এর বাইরে, মুক্তি দেওয়া হয়েছে কোটা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলাকালে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের।


কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন গত দেড় দশকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাবন্দী বিএনপি, জামায়াতে ও তাদের সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অসংখ্য নেতা-কর্মী, যাদের মধ্যে ২০০৭ সালে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুনও রয়েছেন।


এছাড়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন জঙ্গিবাদের অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দীন রাহমানী এবং হত্যা মামলার আলোচিত আসামি শেখ আসলাম, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হতে দেখা যাচ্ছে।


শেখ হাসিনাসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা


দুর্নীতি, হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানান অভিযোগ থাকার পরও গত দেড় দশকে যাদের বিরুদ্ধে সেভাবে আইনি ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি, আগের সরকারের সেইসব ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখন মামলা হতে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যেই শতাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যেগুলোর বেশিরভাগই হত্যা মামলা।


একইভাবে আসামি হয়েছেন সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানাসহ আওয়ামী লীগ সভাপতির পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের অনেকে। সেইসঙ্গে, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধে মামলা হতে দেখা গেছে।


বিভিন্ন মামলায় ইতোমধ্যেই আনিসুল হক, টিপু মুনশি, দীপু মণি, সালমান এফ রহমান, জুনাইদ আহমদ পলকসহ অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আদালতে নেওয়ার সময় তাদের অনেকের উপর হামলাও হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শেখ হাসিনাসহ আগের সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট।


এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, চট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলসহ অনেকে।


তবে কিছুক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই ধালাওভাবে বিভিন্ন মামলায় আসামি করার অভিযোগ রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের কোনো শাস্তি হবে কী-না, সেটি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।


গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন


আওয়ামী লীগ আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া বা গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেরই খোঁজ মিলছে সরকার পরিবর্তনের পর। আগের সরকারের নির্দেশেই বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে তুলে নিয়ে বছরের পর পর আটকে রেখেছিলেন বলে ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় জানা যাচ্ছে।


তেমনই একজন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। ২০১৬ সালের ২৩শে অগাস্ট গুম হওয়ার আট বছর পরে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন তিনি। একইভাবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক একটি রাজনৈতিক দল ‘ইউপিডিএফ’র সংগঠক মাইকেল চাকমা।


গুম থাকা এসব ব্যক্তিদের বর্ণনায় উঠে এসেছে ‘আয়নাঘরে’ নামের কথিত এক গোপন বন্দিশালার কথা। কথিত সেই ‘আয়না ঘর’ থেকে আরো মুক্তি পেয়েছেন জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে আহমেদ বিন কাশেম আরমান। ফলে শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ যত মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের স্বজনরাও এখন আশায় বুক বাঁধছেন।


তাদের দাবির মুখে সম্প্রতি পাঁচ সদস্যের একটি গুম তদন্ত কমিশন গঠন করেছে সরকার। গত দেড় দশকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অপহরণ হওয়া বা গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধানে কাজ করছে।


গুম, খুনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার যেসব ব্যক্তিরা আগে বিষয়গুলো নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেন না, তারা এখন কথা বলছেন। ফলে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে অতীতে যে 'ভয়ের সংস্কৃতি' গড়ে উঠেছিল, সেটা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে।


দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান


ক্ষমতা গ্রহণের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারি কোন কাজে যেন আর দুর্নীতি না হয়, সেটি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।


"দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে সেবা সহজ করার মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে," বুধবার সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন অধ্যাপক ইউনূস।


তিনি আরও বলেন, "সরকারি কেনাকাটায় যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।"


দুর্নীতির অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় অর্ধশত মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


একই অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে কয়েক ডজন আমলার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যেই আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদসহ অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। জালিয়াতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রায় এক লাখ কোটি টাকা তুলে নিয়ে বিদেশে পাচার করার অভিযোগে শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।


গত দেড় দশকে বাংলাদেশ থেকে যত অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, সেগুলো ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। অর্থ আত্মসাৎকারীদের ‘স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ’ এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরাতে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।


“অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে,” সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।


আর্থিক খাত সংস্কারে উদ্যোগ


আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংকিংখাতে ‘নজিরবিহীন লুটপাট’ হয়েছে জানিয়ে এ খাতকে স্থিতিশীল করার জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে সরকার। ব্যাংকিং খাতের টেকসই সংস্কারে ইতোমধ্যেই আলাদা ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খুব শিগগিরই কমিশন গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।


এছাড়া ‘লুটপাটে’র শিকার হওয়া বেশ কিছু ব্যাংকের আগের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করা হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে বেসরকারিখাতে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকও রয়েছে। “ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করাই এখন আমাদের প্রায়োরিটি, এজন্য যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবই আমরা নিচ্ছি” বিবিসি বাংলাকে বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।


এক্ষেত্রে জালিয়াতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে যত টাকা বের হয়ে গেছে, সেগুলো উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। “যারা টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাদের সেই টাকা ফেরত দিবে হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. মনসুর।


এক্ষেত্রে প্রয়োজনে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বতী সরকার। আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন বলে জানানো হয়েছে।


শিক্ষাখাতে যত পরিবর্তন


সরকার পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রেও নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতার মুখে গত ১৮ই জুলাই মাঝপথে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। সরকার পতনের পর সিদ্ধান্ত হয় বাকি পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে ১১ই সেপ্টেম্বরের পর।


এটা জানার পর পরীক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র একটি দল সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে গত ২০শে অগাস্ট এইচএসসি’র বাকি বিষয়ের পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। ফলাফল কীভাবে হিসাব করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্টকরে কিছু বলা হয়নি। এ অবস্থায় এবার এইচএসসিতে 'অটোপাস' হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন।


এদিকে, চলতি বছর নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন তুলে দিয়ে নতুন যে শিক্ষাক্রম আওয়ামী লীগ সরকার চালু করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকার সেটিতে সংস্কার এনে আবারও বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


জনপ্রতিনিধিদের জায়গায় প্রশাসক


শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যূতির পর মাত্র দশ দিনের ব্যবধানে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা ও উপজেলা মেয়র ও চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পট পরিবর্তনের পর সরকার সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে কিংবা পরিষদে না যাওয়ায় নাগরিক সেবা ব্যাহতের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।


স্থানীয় সরকারের ওই চারটি প্রতিষ্ঠানের পদ থেকে মেয়র ও চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হলেও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ক্ষেত্রে ভিন্ন নীতি সরকারের। যেসব জায়গায় চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত রয়েছেন, সেখানে কাজ চালিয়ে নিতে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালন করতে পরিপত্র জারি করেছে সরকার।


নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সক্রিয় জামায়াত


ক্ষমতা হারানোর চারদিন আগে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ নম্বর ধারায় ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ ও তাদের ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রশিবির’কে নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।


কিন্তু নতুন সরকার ক্ষমতায় বসার তৃতীয় সপ্তাহে এসে সিদ্ধান্ত বদলে গেছে। বাতিল করা হয়েছে আগের প্রজ্ঞাপন। ফলে দলটির নেতাকর্মীরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। সারা দেশের পাড়া-মহল্লায় তাদেরকে জনসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে।


এদিকে, ক্ষমতা ছাড়ার পর উল্টো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আদালতে রিট আবেদন করে ‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি সংগঠন। যদিও হাইকোর্ট সেই রিট আবেদেন খারিজ করে দিয়েছে।


১৫ই অগাস্টের ছুটি বাতিল


২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নেওয়ার পর গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান মৃত্যুদিন ১৫ই অগাস্টে সারা দেশে ব্যাপক আয়োজনে শোকদিবস পালিত হতে দেখা গেছে। জাতীয় দিবস হিসেবে ওইদিন সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতার পালা বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেটিও বদলে গেছে।


শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ১৫ই অগাস্টের সরকারি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ঘটনার পর গত ১৫ই অগাস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে দাঁড়াতে দেয়নি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা।


নানান দাবিতে বিক্ষোভ-ঘেরাও


ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরবর্তী প্রায় তিন সপ্তাহজুড়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নানান দাবিতে একের পর এক বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের বিক্ষোভ।


‘রেস্ট প্রথা’ বাতিল করে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত ২৫শে অগাস্ট সারাদিন সচিবালয় অবরোধ করে রেখেছিলেন এই আধা-সামরিক বাহিনীর প্রায় দশ হাজার সদস্য। আলোচনার মাধ্যমে বিকেলে সরকারের পক্ষ থেকে ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিল ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন থামাননি তারা।


পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়েন আনসার সদস্যরা, যাতে উভয়পক্ষের অর্ধ-শতাধিক মানুষ আহত হয়। অবরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার সাড়ে তিনশ’র বেশি আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরবর্তীতে কারাগারে পাঠানো হয়।


অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ আরও অনেক সরকারি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও সচিবালয় আশপাশে সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে পুলিশ।


সেইসঙ্গে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতি ভবন, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ ও মৎস্যভবন সংলগ্ন এলাকাতেও সভা-সমাবেশ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।


parallax ad

news_google_icon_128কালের কণ্ঠের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন


প্রাসঙ্গিক

সম্পর্কিত খবর

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো তিন হত্যা মামলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো তিন হত্যা মামলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরো তিন হত্যা মামলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরো তিন হত্যা মামলা

আত্মগোপনে শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার

আত্মগোপনে শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো ২ হত্যা মামলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো ২ হত্যা মামলা

জাতীয়


প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৮:৪৯

আ. লীগের পতনের এক মাস

নানা সংস্কারে চেষ্টা স্থিতিশীলতা ফেরানোর

 নিজস্ব প্রতিবেদক


নানা সংস্কারে চেষ্টা স্থিতিশীলতা ফেরানোর

ফাইল ছবি


ছাত্র-জনতার দেশ কাঁপানো ২৩ দিনের ঘটনাবহুল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। তবে নানা ঘটনায় আন্দোলনের রেশ এখনো পুরোপুরি কাটেনি। প্রশাসন, পুলিশসহ নানা প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো সেভাবে দৃশ্যমান নয়।



নানা সংস্কারের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টাআওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশব্যাপী লুট, চাঁদাবাজি ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়। এসব অরাজকতা কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিকে জোর করে পদত্যাগ করানোর ঘটনা এখনো অব্যাহত আছে। নির্যাতন, দখল ও লুটপাটের ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় বিক্ষুব্ধ।



দাবি আদায়ে আনসার বাহিনী সচিবালয় ঘেরাও করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে ছাত্ররা তাদের প্রতিহত করে। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তিনি। দেশ ছাড়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা।


বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনা আর ঘটেনি। এত প্রাণহানিও হয়নি অতীতের কোনো অভ্যুত্থানে। সরকারিভাবে নিহতের সঠিক কোনো হিসাব দেওয়া না হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন, এই সংখ্যা হাজারের বেশি। অন্তর্বর্তী সরকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে। এরই মধ্যে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা ও পুলিশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়নি। ওই দিন প্রতিবিপ্লবের আশঙ্কা থাকলেও ছাত্র-জনতা তা রুখে দেয়। এখনো বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিবিপ্লবের আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে। তবে গত এক মাসে গোপালগঞ্জ ছাড়া দেশের অন্য কোথাও প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের কোনো আন্দোলন চোখে পড়েনি।


শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তাঁর টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের বিপুল ভোটে ক্ষমতায় বসেছিলেন তিনি। এরপর নিজের শাসনামলে আর কোনো গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিতে পারেননি তিনি।


রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এতে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েই ছিল। সেটির বহিঃপ্রকাশের জন্য শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল। উপলক্ষ তৈরি করে দেয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।


বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম যে বাংলাদেশ চায় সবাইকে সেই বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে হবে। আমরা একটি আইনের শাসনের দেশ চাই। যাঁরাই জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না।’


ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর মানবাধিকার লঙ্ঘন, ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থপাচার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা, ঋণের নামে ব্যাংক লুটের সুযোগ দেওয়া, আয়বৈষম্য চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াসহ বিগত সরকারের বিস্তৃত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সংস্কারমূলক কাজ শুরু করেছে। সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকও করেছেন।


সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলব, তারা কী চায় সেটা জানব, আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’


বাকের মজুমদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সারা দেশে সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক জায়গায় এখনো এসব সিন্ডিকেট চলছে। অনেক জায়গায় শুধু মাথা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সিস্টেম একই রয়ে গেছে। আমরা সব ধরনের চাঁদাবাজি, দখলদারির বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছি।’


news_google_icon_128কালের কণ্ঠের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

প্রাসঙ্গিক

জাতীয়

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৮:৩১

তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা

 নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা

গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার পোশাক শ্রমিকরা গতকাল বিক্ষোভ করেন। ছবি : কালের কণ্ঠ

পোশাক শিল্পাঞ্চলে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে অস্থিরতা চলছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এই অস্থিরতার কারণে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১৬৭টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কারখানা এলাকায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ পোশাক কারখানাগুলো আবার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকরা। অস্থিতিশীলতা দমনে পুরো শক্তি নিয়োগ করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।


তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে অস্থিরতাগতকাল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এ সভা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক শোভন ইসলাম প্রমুখ।


এর আগে সংগঠনের আটজন সাবেক সভাপতিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংকট উত্তরণে করণীয় ঠিক করতে বৈঠক করেন।


 


বৈঠকে পোশাক কারখানার মালিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, উদ্ভট সব দাবির আড়ালে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে একটি বিশেষ শ্রেণি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।


তিনি বলেন, বহিরাগতদের হামলায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এখন সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশের গোয়েন্দারা কঠোর অবস্থানে থাকবেন বলেছেন।


তাঁরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। তাই কাল (আজ) থেকে পোশাক কারখানা খোলা থাকবে।

এদিকে সাবেক নেতাদের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিজিএমইএ নেতারা শিল্পাঞ্চলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করলেও প্রকৃত কারণ সাধারণ সদস্যদের জানানো হচ্ছে না। এতে পেছন থেকে সদ্য নিষ্ক্রিয় একটি বড় রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের ইন্ধন থাকলেও আমলে আনা হচ্ছে না।


উৎসব ছুটি ১২ দিন, চাকরির ছয় মাস হলেই উৎসব ভাতা প্রদান, হাজিরা বোনাস এক হাজার টাকা, টিফিন বিল-নাইট বিল প্রদান, প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট দেওয়া, নারী শ্রমিক বেশি নিয়োগ না দেওয়া—এ রকম প্রায় দুই ডজন দাবি তুলেছেন পোশাক শ্রমিকরা।


কারা বিক্ষোভ করছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘কারখানার অভ্যন্তরীণ সমস্যা খুব কম। বহিরাগত কারা বিক্ষোভ করছে, চিহ্নিত করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। আমরা তাদের সহযোগিতা করতে পারি।’


বিজিএমইএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, বিক্ষোভ শুধু তৈরি পোশাক নয়, অন্যান্য শিল্পেও ছড়িয়ে পড়েছে। শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে শিল্প পুলিশ মূল ভূমিকা রেখে থাকে। তবে সাম্প্রতিক ঘটনায় তারা বিপর্যস্ত। এই সুযোগে সবাই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।


কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অফিসকক্ষে কয়েকজন উপদেষ্টার বৈঠকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে বিশৃঙ্খলকারীদের গ্রেপ্তার বা আটকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টারা বলেন, এই অসন্তোষের কোনো গতি-প্রকৃতি বোঝা যাচ্ছে না। ভাঙচুরের পেছনে ‘ভাড়াটে’ ও ‘টোকাইরাও’ দায়ী। ৫০ জন রাস্তায় বসে পড়লে পাঁচ লাখ মানুষের অসুবিধা হবে। কাজেই তাদের সরাতে যদি বল প্রয়োগ করতে হয়, লাঠিপেটা করতে হয়, জলকামান ব্যবহার করতে হলে সরকার সেটা করবে।


নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীপুর  জানান, শান্ত হয়নি গাজীপুরের শিল্পাঞ্চল। বরং নতুন নতুন কারখানায় ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন। গতকালও চাকরিতে পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন। এতে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।


এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা নগরীর চান্দনা চৌরাস্তা, চৌধুরীবাড়ি, ভোগড়া বাইপাস, ছয়দানা হারিকেন, কাশিমপুর ও টঙ্গীতে বেশ কয়েকটি কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করে। সাইনবোর্ড, জিরানি বাজার, কোনাবাড়ী, বাসন, বাঘের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ হয়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গতকাল গাজীপুরে ৬০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে জানান গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ।


শ্রীপুরে সিরামিক কারখানায় বিক্ষোভ


গাজীপুর আঞ্চলিক প্রতিনিধি জানান, শ্রীপুরে ১১ দফা দাবিতে একটি সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা গতকাল সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দফায় দফায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। সকাল ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ও শিল্প পুলিশ সেখানে পৌঁছে কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহার কথা বললে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শ্রমিকরা। উপজেলার ধনুয়া এলাকায় আরএকে সিরামিক বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা এ আন্দোলন করেন।


আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কারখানার কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের অপসারণ করতে হবে। এ ছাড়া বাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী মজুরি ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধিসহ (ইনক্রিমেন্ট) তাঁদের ১১ দফা দাবি রয়েছে।


আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানায় কর্মকর্তা যে কজন ভারতের নাগরিক, তাঁরা তাঁদের মূল্যায়ন করেন না। তাঁদের কাছে তাঁরা (শ্রমিক) ভালো আচরণও পান না। শুধু তাই নয়, ওই কর্মকর্তারা আসার পর থেকে তাঁরা নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।


কারখানাটির শ্রমিক আরিফুল ইসলাম জানান, তাঁদের অভিযোগগুলো গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কারখানার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সমাধানের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ১১ দফা দাবিতে গতকাল সকাল প্রায় ৭টা থেকে কর্মবিরতি দিয়ে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে পড়েন।


বাংলাদেশ বেকার সংগঠনের প্রচারপত্র


পোশাকশিল্প এলাকায় বাংলাদেশ বেকার সংগঠন নামের একটি সংগঠন বিভিন্ন দাবিসহ একটি প্রচারপত্র বিলি করে। এতে সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এই সংগঠন থেকে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০০ জনকে চাকরি দিতে হবে; অদক্ষ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ দিতে হবে; শ্রমিকদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে; নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের অনুপাত ৫০ শতাংশ করে রাখতে হবে; প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে মজুরি প্রদান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।


news_google_icon_128কালের কণ্ঠের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

প্রাসঙ্গিক

জাতীয়

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৫:৩৫

ইসির পদত্যাগের প্রস্তুতি, যেকোনো সময় ঘোষণা

 নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসির পদত্যাগের প্রস্তুতি, যেকোনো সময় ঘোষণা

কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পদত্যাগের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এসংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে। তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন সিইসি।


ধারণা করা হচ্ছে, সংবাদ সম্মেলন থেকেই পদত্যাগের ঘোষণা আসতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। নিয়োগের এক দিন পর তাঁরা তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে শপথ নেন।


ওই কমিশনের অধীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বর্জন করে। ভোট শেষে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছিল শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।


বিগত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।


এর মধ্যে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সরকারের পতনের পর প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিলোপ করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনেরও দাবি ওঠে। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।


সর্বশেষ গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে ‘নাগরিক সমাজ’ নামে একটি সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।


 বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের পাশাপাশি ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সংস্কারে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজেদের অবস্থান ও করণীয় জানতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে আউয়াল কমিশন। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মতো নির্বাচন কমিশনেও সংস্কার আসছে, এটি নিশ্চিত বলে মনে করছেন তাঁরা। সে জন্য বেশ কয়েক দিন ধরেই তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা অফিস করলেও বর্তমানে তাঁদের বিদায়ের প্রস্তুতিই প্রাধান্য পাচ্ছে। শেষ সময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জরুরি কাগজপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা।


এদিকে আজ দুপুরে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। এর আগে ইসির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে পদত্যাগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে এবং সংবাদ সম্মেলনে তা ঘোষণা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।


গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজের দপ্তরে অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল জানান, পদত্যাগের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার জানানো হবে। যা বলার বৃহস্পতিবার (আজ) দুপুর ১২টার সংবাদ সম্মেলনে বলা হবে। সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানান তিনি।


সংবিধান (১১৮ অনুচ্ছেদ) অনুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতির আদেশে নিয়োগপ্রাপ্ত। রাষ্ট্রের যেকোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছায় অথবা রাষ্ট্রপতির আদেশে পদত্যাগ করবেন তাঁরা। নির্বাচন কমিশনের সর্বোচ্চ এসব পদে কার্যকালের মেয়াদ তাঁদের কার্যভার গ্রহণের দিন থেকে পাঁচ বছর। তবে বর্তমান কমিশনকে মেয়াদপূর্তির আগেই বিদায় নিতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।


news_google_icon_128কালের কণ্ঠের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

প্রাসঙ্গিক

জাতীয়

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৪:১৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ আজ

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ আজ

বুধবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পূর্তি হলো আজ বৃহস্পতিবার। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।


এক মাস পূর্তি উপলক্ষে আজ রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে এবং আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।


কর্মসূচি ঘোষণা করে সারজিস আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে শহীদি মার্চ করতে চাই। সারা দেশে ইউনিয়ন থেকে মহানগর—সব পর্যায়ে শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে, আহত ভাই-বোন যারা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, যে ভাই-বোনেরা হাত-পা-চোখ হারিয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।’


সারজিস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ঢাকায় শহীদি মার্চ শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে। এরপর নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া এভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।


তিনি বলেন, ‘রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এখনো আমাদের ভাইয়েরা ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কাতরাচ্ছে। গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, কিভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে তার ডকুমেন্টেশন করতে হবে। অনেকে আমাদের বিজয় মিছিল করতে বলছে।


কিন্তু যত দিন না নতুন বাংলাদেশ হচ্ছে, মানুষ অধিকার পাচ্ছে, তত দিন বিজয় মিছিল করা সম্ভব নয়।’

আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে যাঁরা ফ্যাসিবাদের রাজনীতি পুনর্বহাল করতে চান, আপনারা ফেল মেরেছেন অনেক আগেই। এই ছাত্র-নাগরিক, যাঁদের আপনারা অগণিত সময়ের জন্য মানসিক ট্রমার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা বিকশিত হওয়ার পথটাকে আপনারা রুদ্ধ করে দিয়েছেন। সেটির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। সেটির দায়ভার আপনারা না নিয়ে আবার যদি রাজনীতি করার, পুনর্বাসন করার চিন্তা করেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে এই ছাত্র-নাগরিক যাঁরা শহীদ হয়েছেন, আমরা অনুভব করি তাঁদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, আমাদের জবাবদিহি রয়েছে।


সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহর সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলব, তারা কী চায় সেটা জানব, আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’


আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম যে বাংলাদেশে চায় সবাইকে সেই বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে হবে। তাই আপনারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে সহায়তা করুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কারো অপরাধ খুঁজে পেলে তাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। আমরা একটি আইনের শাসনের দেশ চাই। যারাই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’


news_google_icon_128কালের কণ্ঠের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

প্রাসঙ্গিক

সর্বশেষ সংবাদ

এক মঞ্চে গাইবেন হাসান-জেমস

 ২ সেকেন্ড আগে |বিনোদন

পদ-পদবির লোভ যেভাবে পতন ডেকে আনে

 ৬ মিনিট আগে |ইসলামী জীবন

রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে শিকে চান পুতিন

 ৯ মিনিট আগে |বিশ্ব

‘লাইফলাইন’ মিলে গেছে হাতুরাসিংহের!

 ৪৪ মিনিট আগে |খেলা

‘লুট হওয়া টাকার শূন্যস্থান পূরণে প্রয়োজন দুই লাখ কোটি টাকা’

 ৪৯ মিনিট আগে |বাণিজ্য

পাকিস্তান ভাবেনি গতির ঝড় তুলবে বাংলাদেশ

 ১ ঘণ্টা আগে |খেলা

শেখ হাসিনার পতনের পর যেসব বড় পরিবর্তন হলো দেশে

 ১ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

এখনই সময়

 ১ ঘণ্টা আগে |খেলা

নানা সংস্কারে চেষ্টা স্থিতিশীলতা ফেরানোর

 ১ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা

 ১ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

কৃষি : নেদারল্যান্ডসে আধুনিক প্রযুক্তিতে ক্যাপসিকাম

 ২ ঘণ্টা আগে |বিবিধ

ইসির পদত্যাগের প্রস্তুতি, যেকোনো সময় ঘোষণা

 ৪ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

বিএসএফের গুলিতে স্বর্ণা দাস নিহত, ৪৫ ঘণ্টা পর লাশ ফেরত

 ৫ ঘণ্টা আগে |সারাবাংলা

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় স্কুলে গুলি, নিহত ৪

 ৫ ঘণ্টা আগে |বিশ্ব

ট্রাকচাপায় গেল ঠিকাদারের প্রাণ

 ৫ ঘণ্টা আগে |সারাবাংলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ আজ

 ৬ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিনিয়োগ ঝুঁকিতে, বাকি কাজে শঙ্কা

 ৬ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

রাবিতে ক্লাস শুরু হচ্ছে রবিবার

 ৬ ঘণ্টা আগে |শিক্ষা

লুট হওয়া অস্ত্রের প্রায় অর্ধেকই জমা পড়েনি

 ৬ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ১৬ সেপ্টেম্বর

 ৬ ঘণ্টা আগে |ইসলামী জীবন

ডিউটি না করেই বেতন নেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

 ৭ ঘণ্টা আগে |সারাবাংলা

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

 ৭ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে বরণ করা হলো শান্তদের

 ৮ ঘণ্টা আগে |খেলা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরো তিন হত্যা মামলা

 ৮ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

মুদি দোকানি হত্যা: আসামিপক্ষের বাড়িঘরে চলছে হামলা-ভাঙচুর

 ৮ ঘণ্টা আগে |সারাবাংলা

বড়লেখায় পিকআপ উল্টে প্রাণ গেল ব্যবসায়ীর

 ৯ ঘণ্টা আগে |সারাবাংলা

৯৬ মামলায় জামিন, কারামুক্ত হলেন রিজেন্টের সাহেদ

 ৯ ঘণ্টা আগে |আইন-আদালত

মুদ্রাবাজার

 ১০ ঘণ্টা আগে |শিল্প বাণিজ্য

বৈশ্বিক পণ্যবাজার (ডলারে)

 ১০ ঘণ্টা আগে |শিল্প বাণিজ্য

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের এক মাস পূর্তি

 ১০ ঘণ্টা আগে |খবর

সর্বাধিক পঠিত

এক দিনের ছুটি নিলেই টানা ৪ দিন ছুটি

 ১৩ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

১০ হাজার দলীয় স্থাপনায় হামলা করা হয়েছে : নানক

 ১২ ঘণ্টা আগে |রাজনীতি

‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট প্রসঙ্গে যা বললেন মনিরা মিঠু

 ২২ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

‘কামানে যে গরম জল থাকে সেটার কথা বলেছি’

 ১৪ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

গণত্রাণে মোট সংগ্রহ ১১ কোটি, ব্যয় ১ কোটি ৭৫ লাখ

 ১৪ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট ফাঁস, অরুনা বিশ্বাসকে যা বললেন পরীমনি

 ২০ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

 ২০ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামকরণে উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি গঠন

 ১২ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

সাবেক মন্ত্রীপুত্রের যুক্তরাষ্ট্রে ১২ অ্যাপার্টমেন্ট!

 ২১ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

সাগরে লঘুচাপের আভাস, যা জানাল অধিদপ্তর

 ১২ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

সচিবদের যেসব নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

 ১৮ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

বৃহস্পতিবার আসতে পারে সিইসির পদত্যাগের ঘোষণা

 ১৮ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত হলেন লুৎফে সিদ্দিকী

 ১৫ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

শেখ মুজিবকে নবী হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল আ. লীগ: হাসনাত

 ১৮ ঘণ্টা আগে |শিক্ষা

‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত থাকা প্রসঙ্গে যা বললেন বাবু

 ২০ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সাদিয়া আয়মান

 ১৯ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

আইএফআইসি ব্যাংক থেকে সরানো হলো সালমানকে, নতুন পর্ষদ গঠন

 ১৬ ঘণ্টা আগে |বাণিজ্য

বিএনপি নেতা আযমের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

 ১১ ঘণ্টা আগে |রাজনীতি

১৯ কাস্টমস কমিশনারকে একযোগে বদলি করল এনবিআর

 ১৩ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

 ১৩ ঘণ্টা আগে |রাজনীতি

৯৬ মামলায় জামিন, কারামুক্ত হলেন রিজেন্টের সাহেদ

 ৯ ঘণ্টা আগে |আইন-আদালত

রাতে শুনেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন, দিনে গেজেটে দেখেন অন্য নাম

 ১৭ ঘণ্টা আগে |বিনোদন

শেখ হাসিনার পতনের পর যেসব বড় পরিবর্তন হলো দেশে

 ১ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

বিটিভিকে যে পরামর্শ দিলেন তথ্য উপদেষ্টা

 ১৪ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

আন্দোলনে নিহত কতজনের পরিচয় মিলেছে? জানালেন নাহিদ

 ১৫ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

এস আলমের সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের চুক্তি বাতিল

 ১৩ ঘণ্টা আগে |বাণিজ্য

নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেন শহীদুল, নিশ্চুপ ছিলেন মামুন

 ২৩ ঘণ্টা আগে |আইন-আদালত

শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ে যা বললেন শ্রম উপদেষ্টা

 ১৮ ঘণ্টা আগে |জাতীয়

রেকর্ড : দুই লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ, বাড়তে পারে আরো!

 ২৩ ঘণ্টা আগে |বাণিজ্য

বৃহস্পতিবার খুলবে সাভার-আশুলিয়ার বন্ধ কারখানা : বিজিএমইএ

 ১৫ ঘণ্টা আগে |জাতীয়


মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

play.google kalerkanthoapple app kalerkantho

অনুসরণ করুন

threads

আজকের পত্রিকা

প্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাখবরশুভসংঘদেশে দেশে

অনলাইন

জাতীয়সারাবাংলাবিশ্ববাণিজ্যবিনোদনখেলাধুলা

বিজ্ঞাপন

মূল্য তালিকা (প্রিন্ট ভার্সন)

সম্পাদক : হাসান হাফিজ


আমাদের সম্পর্কেশর্তাবলীগোপনীয়তা নীতিযোগাযোগ করুন

স্বত্ব © ২০২৪ কালের কণ্ঠ


জাতিসংঘে ড. ইউনুসের ভাষন

  জাতিসংঘে ড. ইউনুসের ভাষন